Logo Logo

নির্বাচনে লড়বেন নেপালের জেন-জি আন্দোলনের নেতা সুদান গুরুং


Splash Image

নেপালের জেন-জি আন্দোলনের নেতা সুদান গুরুং।

চলতি মাসের শুরুতে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে কেপি শর্মা অলি সরকারের পতন ঘটায় জেন‑জি আন্দোলনকারীরা। তীব্র বিক্ষোভের মুখে মাত্র দুই দিনের মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত হন শাসকবর; এরপর অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি, যিনি দায়িত্ব নেয়ার পর ঘোষণা দেন আগামী ২০২৬ সালের মার্চে দেশে নতুন সংবিধানসাম্যিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।


বিজ্ঞাপন


অভ্যুত্থানের অন্যতম পরিচিত মুখ ও জেন‑জিদের প্রধান নেতা ৩৬ বছর বয়সী সুদান গুরুং ওই নির্বাচনে অংশ নেবেন বলেই এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন স্টার্ট হেয়ার্সের সাংবাদিক সান্দ্রা গাথম্যানকে।

সাক্ষাৎকারে সুদান গুরুং বলেন, তার দল ইতিমধ্যে সমর্থক সংগ্রহ শুরু করেছে এবং তরুণদের ‘পরিবর্তনের জন্য আন্দোলনে’ যুক্ত করার কাজ চলছে।

সুদান গুরুং বলেন, “পূর্বের সরকার ছিল স্বার্থপর এবং দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদে পরিপূর্ণ। পুরনো সরকার আমাদের রাজনীতিতে এনেছে। যদি তারা এমন রাজনীতি চায় তাহলে তারা এটিই পাবে। আমরা আগামী নির্বাচনে লড়ব কারণ আমরা এখনই পিছপা হব না।” তিনি আরও যোগ করেন যে, তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নয়—দলবদ্ধভাবে নির্বাচন ছাড়াই মাঠে নামবেন। “যদি আমি শুধুমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করি তাহলে আমরা এই তরুণদের শক্তি পাব না। একসঙ্গে আমরা শক্তিশালী।”

জেন‑জির নির্বাচন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সুদান গুরুং ও তার মহলে স্পষ্ট আবেদন এসেছে—আগের দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদরা যেন মার্চের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে তার জন্য দ্রুত এবং সময়োপযোগী বিচার নিশ্চিত করা হবে। সুদান গুরুং দাবি করেছেন, “আমরা নিশ্চিত হব দুর্নীতির তদন্ত সঠিকভাবে, সঠিক সময়ের মধ্যে হবে। যেন তারা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে।”

সুদান গুরুং শুধু দুর্নীতিবিরোধী এജেন্ডা নিয়েই সীমাবদ্ধ নন; তিনি অভিযোগ করেছেন যে পুরনো রাজনৈতিক দলগুলো একদিকে যেমন দুর্নীতির দায়ে জড়িত, তেমনি দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা, বিশেষত পর্যটন খাতের উন্নয়নকে তারা পর্যাপ্ত গুরুত্ব দেয়নি। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, জেন‑জি সরকারের লক্ষ্য থাকবে নেপালের পর্যটন খাতকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশ চীন ও ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করা — “এটি হবে বাইরের কোনো শক্তির হস্তক্ষেপ ছাড়া। তাদের আমাদের সম্মান জানাতে হবে। আমাদেরও তাদের সম্মান জানাতে হবে।”

নিজে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছার বিষয়ে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলে সুদান গুরুং নীরসভাবে বলেন, “আমি বলব না আমি যোগ্য ব্যক্তি। কিন্তু মানুষ যদি আমাকে বেছে নেয় আমি অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য লড়াই করব।” পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন যে, আন্দোলনের পথ ঘুরিয়ে কথা বলিয়ে তাদের নিষ্ক্রিয় করা, ভয় দেখিয়ে নিবৃত করার চেষ্টা অতিমাত্রায় ঘটছে; তবু তিনি আশ্বস্ত করেছেন—কেউ কোন হুমকিতে ভীত হয়ে জনস্বার্থে যুদ্ধে পিছু হটাতে পারবেনা।

রাজনৈতিক প্রভাব ও সামনে কী অপেক্ষা করছে:

জেন‑জির দ্রুত সংগঠিত হওয়া এবং সুদান গুরুংয়ের মতো তরুণ নেতৃত্বের সরাসরি মাঠে নামা নেপালের রাজনৈতিক মানচিত্রে বড় ধরনের তোলপাড় আনতে পারে। তাদের প্রতিশ্রুতিগুলো—দুর্নীতিবিরোধী তৎপরতা, তরুণদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, পর্যটন ও বৈদেশিক সম্পর্ক পুনর্গঠন—সবই ধারাবাহিক ও তৎপর বাস্তবায়ন চাইবে। আর তা সফল করতে হলে আইনগত প্রক্রিয়া, স্বচ্ছ অনুসন্ধান ও ন্যায্য বিচারবুদ্ধির ভূমিকা অপরিহার্য থাকবে, বিশেষ করে যদি তারা আগের দুর্নীতিবাজ নেতাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখতে চায়।

এই প্রেক্ষাপটে আগামী ২০২৬ সালের মার্চে ঘোষিত নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর কৌশল, আদালতি পদক্ষেপ ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া—তিনটিই চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করবে নেপালের রাজনৈতিক পুনর্গঠন কেমন হবে।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...