বিজ্ঞাপন
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপুরের শিবপুরের আইকিউ সিটি মেডিকেল কলেজের ওই শিক্ষার্থীর বাড়ি ওডিশার জলেশ্বর এলাকায়। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি এক বন্ধুর সঙ্গে বাইরে ঘুরতে বের হন। কলেজের গেটের কাছে কয়েকজন ব্যক্তি তাদের পথরোধ করেন এবং পরে ওই তরুণীকে জোর করে পাশের জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন।
ভুক্তভোগীর বাবা জানিয়েছেন, তার মেয়ের সঙ্গে থাকা বন্ধু পালিয়ে গেছে এবং তিনি এ ঘটনায় তারও জড়িত থাকার সম্ভাবনা দেখছেন। তিনি বলেন, “বন্ধু ভুল বোঝানো পরিস্থিতিতে মেয়েকে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়েছিল। ধর্ষকরা তার মেয়ের মোবাইল ফোন ও ৫ হাজার রুপি কেড়ে নিয়েছে।”
ঘটনার পর ওই শিক্ষার্থীকে দুর্গাপুরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ধর্ষণের শিকার তরুণীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং ভুক্তভোগীর বন্ধুসহ একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের নারী ও শিশু উন্নয়নমন্ত্রী এবং তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী শশী পাজাঁ বলেছেন, “বর্তমানে ওই শিক্ষার্থী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার মানসিক কাউন্সেলিং করা হবে। অভিভাবকরা পুলিশি তদন্তের ওপর আস্থা রেখেছেন। এই ধরনের অপরাধকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা উচিত নয়।” তিনি উল্লেখ করেন, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিজেপি সব সময় এসব ঘটনায় রাজনীতি খোঁজে।”
রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে ঘটনার বিস্তারিত প্রতিবেদন চেয়েছে। এছাড়া, জাতীয় নারী কমিশনের (এনসিডব্লিউ) একটি প্রতিনিধি দল দুর্গাপুরে গিয়ে ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করবে। এনসিডব্লিউ-এর সদস্য অর্চনা মজুমদার বলেন, “বাংলায় নারীর বিরুদ্ধে অপরাধ বাড়ছে। পুলিশ এসব ঘটনায় আগাম পদক্ষেপ নিচ্ছে না, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানাব, তিনি এসব অপরাধ দমনে সক্রিয় ভূমিকা নেন।”
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, চলতি বছরের জুলাইয়ে কলকাতার কসবার সাউথ কলকাতা ল কলেজের ভেতরে এক শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। এ ঘটনায় সাবেক এক শিক্ষার্থীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া, গত বছরের আগস্টে কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ৩১ বছর বয়সী এক নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ সৃষ্টি হয়। ওই ঘটনায় পুলিশের স্বেচ্ছাসেবী কর্মী সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...