Logo Logo

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বেরোবি শিক্ষার্থী শিপন আহমেদের মৃত্যু


Splash Image

“নবীনবরণে ছেলেটি হাসিমুখে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অনুভূতির কথা বলেছিল। ব্যক্তিগতভাবে খুব আলাপ না হলেও ওকে দেখলেই মনে হতো—স্বপ্নবাজ, প্রাণচঞ্চল এক তরুণ। কিন্তু আজ সেই ছেলেটিই আমাদের মাঝে নেই…”—বলতে বলতে কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিজের শোকের অনুভূতি জানালেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক মিন্টু বড়ুয়া।


বিজ্ঞাপন


রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) অর্থনীতি বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শিপন আহমেদ গত সোমবার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে বগুড়ার সাতমাথা এলাকায় নিজ বাড়িতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান।

পারিবারিক সূত্র জানায়, সেদিন বিকেলে কৃষিজমিতে সেচকাজ দেখতে যান শিপন। এ সময় সেচযন্ত্রে হঠাৎ সমস্যা দেখা দিলে তিনি সেটি ঠিক করার চেষ্টা করেন। অসতর্ক মুহূর্তেই বিদ্যুতের সংস্পর্শে এসে গুরুতর আহত হন তিনি। দ্রুত হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

অকাল এই মৃত্যুতে বেরোবি ক্যাম্পাসজুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোক। সহপাঠীরা জানান, শান্ত, ভদ্র ও পরিশ্রমী হিসেবে সবার কাছে পরিচিত ছিলেন শিপন। মাত্র কয়েক মাস আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া এই তরুণের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও ছিল পরিষ্কার—একইসঙ্গে তিনি মেডিকেল কলেজ এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সে কারণে কিছুদিন ক্লাস করার পর তিনি বাড়িতে ফিরে যান। আর সেখানেই ঘটে যায় এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা।

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আদনান আব্দুল্লাহ বলেন, “আমাদের ব্যাচমেট শিপনের অকাল মৃত্যু পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। হয়তো তার সামনে সুন্দর একটা ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছিল। আমরা তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।”

অর্থনীতি ছাত্রসংসদের সাধারণ সম্পাদক ও ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, “আমাদের ছোটভাই শিপনের ইন্তেকালে আমরা ব্যথিত। সদ্য বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সূচনা করা এক শিক্ষার্থীর এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া কঠিন। আমরা শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।”

অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক সাইফুদ্দীন খালেদ বলেন, “শিপনের মৃত্যু আমাদের অর্থনীতি পরিবারের জন্য অত্যন্ত বেদনাবিধুর। আমরা কখনো ভাবিনি, এভাবে কোনো শিক্ষার্থীকে হারাতে হবে। তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিচ্ছি।”

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ১০টায় বগুড়ার সাতমাথার পীরাপাট গ্রামে জানাজা শেষে শিপনকে দাফন করা হয়। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। তরুণ এই শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যু পরিবার, সহপাঠী ও শিক্ষকদের মাঝে গভীর শোকের ছায়া ফেলে গেছে।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...