বিজ্ঞাপন
দারিদ্র্য থেকে সিন্ডিকেটের শীর্ষে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রামুর খুনিয়া পালং ইউনিয়নের পূর্ব গোয়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা ডালিম আব্দুল করিম ও শুকতারা বেগম দম্পতির ছেলে। দারিদ্র্যের কারণে অল্প বয়স থেকেই তিনি সিএনজি চালিয়ে পরিবারের খরচ চালাতেন। সেই সময়েই সীমান্ত সংলগ্ন চোরাচালানকারীদের সঙ্গে তার যোগাযোগ তৈরি হয়। প্রথমে ছোট চালান বহনের কাজ করলেও পরে নিজস্ব নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন এবং দ্রুত সময়ের মধ্যেই হয়ে ওঠেন সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রক।
একজন সিএনজি চালক বলেন, ডালিম আগে আমাদের সঙ্গে গাড়ি চালাত, এখন শুধু চালান নিয়ন্ত্রণ করে। এত অল্প বয়সে এত টাকার মালিক হবে—ভাবতেই পারে না কেউ।”
ইয়াবা সাপ্লাই চেইনের অভিযোগ প্রথমে অবৈধ সিগারেট ব্যবসায় যুক্ত থাকলেও পরে ডালিমের কার্যক্রম ইয়াবা চোরাচালান পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। স্থানীয়দের ভাষ্য, এখন তার নিজস্ব সাপ্লাই চেইন রয়েছে—যেখানে কেউ বহন করে, কেউ পাহারা দেয়, আবার কেউ দরজায় দরজায় সরবরাহ করে।
খুব অল্প সময়েই তার জীবনযাত্রায় বড় পরিবর্তন আসে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, তিনি দামি মোটরগাড়ি ব্যবহার করেন, দোতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন এবং প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে বিয়ের আয়োজনও করেছেন। নামে-বেনামে জমি কেনাসহ আরও সম্পদ গড়া নিয়েও নানা অভিযোগ রয়েছে।
কয়েক মাস আগে বিজিবি তাকে অবৈধ সিগারেটের চালানসহ আটক করলেও অল্প সময়ের মধ্যেই ছাড়া পাওয়ায় এলাকাজুড়ে প্রশ্ন ওঠে।
একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন, “টাকার জোরে চেকপোস্ট থেকে তদন্ত—সব কিছুই ম্যানেজ করা হয়। তাই তাকে ঠেকানো কঠিন।”
ভাইরাল অডিও, তবুও নীরব প্রশাসন
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডালিমের কথিত একটি কল রেকর্ড ভাইরাল হয়, যেখানে তিন কাট ইয়াবা বেচাকেনা নিয়ে কথোপকথন শোনা যায় বলে স্থানীয়দের দাবি। অডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরও প্রশাসন দৃশ্যমান ব্যবস্থা না নেওয়ায় জনমনে ক্ষোভ বাড়ছে।
অভিযোগ রয়েছে, ডালিম টাকা দিয়ে অডিওটি অনলাইন থেকে সরানোর চেষ্টা করেছেন। এছাড়া স্থানীয়দের দাবি—রামু থানার কিছু অসাধু সদস্যের কাছ থেকে জব্দকৃত মাদক কম দামে কিনে থাকেন তিনি। অভিযানে কম পরিমাণ দেখিয়ে বাকি অংশ বিক্রি করা হয় এবং সেগুলোর অন্যতম ক্রেতা হিসেবে পরিচিত তিনি।
সাংবাদিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ডালিম হুমকি দিয়ে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে রিপোর্ট করলে মামলা করে দেব।
যুবসমাজ ধ্বংসের শঙ্কা ডালিমের উত্থানকে স্থানীয়রা শুধু ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, বরং সামাজিক সংকটের প্রতিচ্ছবি হিসেবে দেখছেন। তার টাকার লোভে এলাকার অনেক তরুণ অপরাধের পথে ঝুঁকছে—কেউ বহন করছে, কেউ পাহারা দিচ্ছে, কেউ আবার সরবরাহকারীর ভূমিকা পালন করছে।
একজন স্কুল শিক্ষক বলেন,“ডালিম এখন তরুণদের জন্য ভয়ানক হুমকি। দ্রুত টাকা রোজগারের লোভে ছেলেরা নিজেদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে।”
কঠোর আইনি ব্যবস্থার দাবি স্থানীয়দের মতে, এখনই প্রশাসন কঠোর নজরদারি ও আইন প্রয়োগ না করলে সীমান্ত এলাকায় আরও সিন্ডিকেট গড়ে উঠবে এবং পুরো এলাকার নিরাপত্তা ভেঙে পড়বে।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...