Logo Logo

বাংলাদেশে গণমাধ্যমের অবস্থা নিয়ে সিজেএ-র নিবন্ধ, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিবাদ


Splash Image

বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কমনওয়েলথ জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের (সিজেএ) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি নিবন্ধের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।


বিজ্ঞাপন


২০ জুন প্রকাশিত ‘দ্য ট্রুথ উইল আউট: হাউ প্রেস ফ্রিডম ইজ সাপ্রেস্ড ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামের নিবন্ধে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সিজেএ নির্বাহী কমিটির সদস্য উইলিয়াম হরসলি।

সরকারি অবস্থান স্পষ্ট করে রবিবার একটি প্রতিবাদপত্র প্রকাশ করা হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ ‘CA Press Wing Facts’-এ।

প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, হরসলির নিবন্ধে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের লন্ডন সফর এবং সরকারের গণমাধ্যম নীতির ব্যাখ্যা বিকৃতভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। এতে দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে খাটো করে দেখা হয়েছে।

সরকার দাবি করে, গণবিক্ষোভ, মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদ এবং জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে এই সরকার গঠিত হয়েছে, কোনো ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নয়।

চ্যাথাম হাউস বক্তৃতায় ইউনূসের তিন দফা এজেন্ডা

১১ জুন লন্ডনের চ্যাথাম হাউসে দেওয়া বক্তৃতায় অধ্যাপক ইউনূস তিনটি মূল লক্ষ্য তুলে ধরেন:

১. রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা,

২. গুরুতর অপরাধের বিচারের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং

৩. একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন।

সরকারের মতে, এগুলো ক্ষমতা কুক্ষিগত করার প্রক্রিয়া নয়, বরং জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি।

বর্তমান সরকার স্বীকার করেছে যে, অনেক মামলা এখনো বিচারাধীন। তবে এসব মামলা রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপে পরিচালিত হচ্ছে না বলেই দাবি তাদের। পুলিশ ও প্রসিকিউশনকে প্রমাণ ও নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে কাজ করতে বলা হয়েছে।

বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে সম্মান জানানো হচ্ছে এবং যেসব মামলায় আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ হয়নি, সেগুলো বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৬ হাজার ৪২৯টি ভিত্তিহীন মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে, যা ন্যায়বিচার পুনঃপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ বলে দাবি সরকারের।

সরকার জানায়, অতীতে সাংবাদিক, রাজনীতিক ও অধিকারকর্মীদের দমন একটি নির্দিষ্ট কাঠামোর মাধ্যমে পরিচালিত হতো, কিন্তু বর্তমান সরকার সেই কাঠামো ভাঙার চেষ্টা করছে। এ লক্ষ্যে বিচারব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংস্কারে একটি পৃথক কমিশন গঠনের কথাও জানানো হয়েছে।

অধ্যাপক ইউনূস চ্যাথাম হাউসে বক্তৃতায় বলেছিলেন, “মানুষের জীবনে কখনও এত স্বাধীনতা ছিল না।” সরকার বলছে, নিপীড়নের সময়কাল পার করা মানুষদের কাছে এটি বাস্তবতা, যদিও তা অনেকে অতিরঞ্জিত মনে করতে পারেন।

প্রতিবাদপত্রে শেষ পর্যন্ত সরকারের বার্তা স্পষ্ট: পথ কঠিন, চ্যালেঞ্জ বহু, কিন্তু লক্ষ্য একটাই—আইনের শাসন, রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তি এবং জাতীয় পুনর্মিলন নিশ্চিত করা।

তারা বলছে, গণতন্ত্রে ফেরার এই মুহূর্তে প্রতিটি পদক্ষেপ দায়বদ্ধতা ও মানবিকতার সঙ্গে নেওয়া হচ্ছে, যেন অতীতের ভুল না হয় পুনরাবৃত্ত।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...