বিজ্ঞাপন
সভায় তিনি আরও বলেন, ডায়রিয়া, রাতকানা রোগসহ অনেক প্রতিরোধযোগ্য রোগ আমরা নিয়ন্ত্রণে এনেছি। তবু আজও দেশের শিশুরা টাইফয়েডে মারা যায়, কেউ কেউ স্থায়ী অঙ্গহানির শিকার হয়। এটি আমাদের জন্য লজ্জার বিষয়, কারণ টাইফয়েড কোনো জটিল বা অজানা রোগ নয়—এটি পুরোপুরি প্রতিরোধযোগ্য। দেরিতে হলেও আমরা এই টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছি এবং বিশ্বাস করি এবারও সফল হবো।
নূরজাহান বেগম উল্লেখ করেন, টাইফয়েড অল্প বয়সী শিশুদের জীবন বিপন্ন করে, অথচ পরিবারগুলো এর গুরুত্ব বোঝে না। অনেকেই জানে না যে টাইফয়েডের টিকা এখন দেশে পাওয়া যাচ্ছে। এটি আমাদের যোগাযোগের ঘাটতি। তাই টিকা নিয়ে মানুষ যেন বিভ্রান্তি বা ভয় না পান, সেই প্রচারণা বাড়াতে হবে। স্কুল, মসজিদ ও কমিউনিটি সেন্টারসহ সব জায়গায় বার্তা পৌঁছানো জরুরি।
তিনি সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, এটি শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়। ইমাম, শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, সমাজকর্মীসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। মিডিয়া এই প্রচারণার বড় সহযোদ্ধা। স্বাস্থ্য খাত একা সফল হতে পারে না, সামাজিক সহযোগিতাই মূল শক্তি।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হবে শতভাগ শিশুর টিকাদান নিশ্চিত করা। কেউ যেন বাদ না যায়। একটি শিশু বাদ পড়া মানে একটি পরিবার ঝুঁকিতে থাকা। জন্মসনদ থাকুক বা না থাকুক, কোনো অজুহাতে শিশুকে বাদ দেওয়া যাবে না। প্রত্যেক ঘরের কাজের মানুষ ও বস্তির শিশুরাও টিকার আওতায় আসবে।”
তিনি প্রশাসনিক জটিলতা কমানোর পরামর্শ দিয়ে বলেন, টাইফয়েডের টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন যেন কষ্টকর না হয়। সবার জন্য এটি সহজ, বিনামূল্যে এবং গ্রহণযোগ্য রাখতে হবে। মানুষকে বোঝাতে হবে—এটি বিলাসিতা নয়, বেঁচে থাকার প্রয়োজন।
সভায় স্বাস্থ্য খাতের সফল কর্মসূচি হিসেবে জাতীয় টিকাদান কর্মসূচির উদাহরণ উল্লেখ করে স্বাস্থ্যের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, টাইফয়েডও অচিরেই নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আসবে। এজন্য সক্ষম জনবল তৈরি করতে হবে। মেডিকেল কলেজ, নার্সিং কলেজ ও ইন্টার্ন ডাক্তারদের মাঠপর্যায়ে যুক্ত করলে কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্যসচিব মো. সাইদুর রহমান। এতে বক্তব্য দেন— স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর, জনস্বাস্থ্য অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ টি এম সাইফুল ইসলাম, এনজিও ব্যুরোর মহাপরিচালক দাউদ মিয়া, ইউনিসেফ প্রতিনিধি দীপিকা শর্মা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রাজেশ নরওয়াসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...