বিজ্ঞাপন
পশ্চিমা বিশ্বের বিবিসি, সিএনএন, দ্য গার্ডিয়ান, রয়টার্স এবং মধ্যপ্রাচ্যের আল জাজিরা থেকে শুরু করে ভারত, পাকিস্তান ও তুরস্কের মতো দক্ষিণ এশিয়া ও অন্যান্য দেশের প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলো এই রায়কে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে কভার করেছে। এই রায় ঘোষণা করা হয় এমন এক সময়ে যখন সামনেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের মূল বিষয়বস্তু তুলে ধরা হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন উভয়েই জানায়, গত বছরের সরকারবিরোধী প্রতিবাদ এবং ছাত্র আন্দোলনকে কঠোরভাবে দমনের অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ভারতে নির্বাসনে থাকায় তাঁর অনুপস্থিতিতেই বিচারপ্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়।
সিএনএন আরও জানায়, ট্রাইব্যুনালের তিন বিচারকের একটি প্যানেল এই রায় ঘোষণা করে এবং সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, শত শত বাহ্যিক হত্যার (Extrajudicial Killings) প্ররোচনা ও উৎসাহ দেওয়ার জন্য হাসিনা দায়ী ছিলেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই রায়কে গত কয়েক দশকে কোনো সাবেক বাংলাদেশি নেতার বিরুদ্ধে নেওয়া 'নাটকীয় আইনি পদক্ষেপ' হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি এবং আল জাজিরা তাদের খবরে "মানবতাবিরোধী অপরাধ" শব্দটির ওপর জোর দিয়েছে। এএফপি-এর খবর অনুযায়ী, বিচারক গোলাম মর্তূজা মজুমদার রায় পড়ে শোনাতে গিয়ে বলেন, শেখ হাসিনাকে তিনটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগে দোষী পাওয়া গেছে: হত্যায় উসকানি, হত্যার নির্দেশ দেওয়া এবং সংঘটিত নৃশংসতা ঠেকাতে ব্যর্থতা। এই তিনটি অভিযোগের জন্য আদালত তাকে 'একটি মাত্র দণ্ড, আর তা হলো মৃত্যুদণ্ড' প্রদান করেছেন।
অন্যদিকে, তুরস্কের আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, হাসিনা গত বছর ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান এবং আদালত তাকে সেই সময়ের উত্তেজনায় ১৪০০-রও বেশি মানুষের মৃত্যুর গণহত্যার জন্য দায়ী করেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এই রায়ের বিস্তারিত তুলে ধরে জানিয়েছে যে, মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারকে প্রধান করে গঠিত তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল একই অভিযোগে হাসিনার দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগী—সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধেও রায় ঘোষণা করেছেন। আদালত জানান, এই তিন অভিযুক্ত পরস্পরের সহযোগিতায় বিক্ষোভকারীদের হত্যা করার উদ্দেশ্যে নৃশংসতা চালিয়েছিলেন। তবে সাবেক পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ট্রাইব্যুনাল ও দেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়ায় অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তান ও অন্যান্য দেশের গণমাধ্যমগুলোও এএফপি ও রয়টার্সের অনুকরণে এই সংবাদটি গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করেছে।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...